কোরআনে বর্ণিত সবচেয়ে ভয়ংকর নারী!
Published: 06 July 2025 20:07 PM
ইসলামের ইতিহাসে এমন এক ভয়ংকর নারীর নাম পাওয়া যায়, যার পাপের জন্য ইবলিশও তাকে সমিহ করত। ইসলামী ব্যাখ্যায় তিনি জাহান্নামের মা বলেও অভিহিত।
তিনি ছিলেন উমাইয়া গোত্রের কন্যা, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চাচা আবু লাহাবের স্ত্রী। তার নাম উম্মে জামিল। মক্কার কুরাইশ বংশের এক প্রভাবশালী নারী ছিলেন তিনি।
বলা হয়, ইসলামবিদ্বেষীরা ইসলামের প্রসার রুখে দিতে এই নারীর ষড়যন্ত্রমূলক পথ আজও অনুসরণ করে। ইসলাম ধ্বংসের বহু পরিকল্পনার তিনি নিজে তৈরী করেন। আর এসব পাপাচারের কারণে তিনি হয়ে ওঠেন ইতিহাসের সবচেয়ে নিন্দিত নারীর একজন।
বাহ্যিকভাবে তিনি ছিলেন রূপসী, রাজকীয় মর্যাদায় অভিষিক্ত। সম্মান, সম্পদ, ক্ষমতা—সবকিছুই ছিল তার হাতে। তবে তার হৃদয়ে স্থান নেয়নি বিনয় কিংবা মানবতা। বরং তার অন্তর ছিল অহংকারে পূর্ণ। তার হৃদয়ে বাস করত হিংসা, ঈর্ষা ও ইসলামের প্রতি গা-জ্বালানো ঘৃণা।
যখন প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর পথের দাওয়াত দিতে শুরু করলেন, তখন মক্কার আকাশে ছড়িয়ে পড়ল সত্যের দীপ্তি। কিন্তু এ আলোই অস্থির করে তুলল অন্ধকারের মানুষদের। তাদের একজন আবু লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামিল। তিনি ছিলেন সেই বিষাক্ত বাতাস, যা ইসলামের যাত্রাপথে ঝড় তুলতে চেয়েছিল। উম্মে জামিল নিজে গুজব ছড়াতেন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বিরুদ্ধে। এমনকি খাদিজা (রা.)-এর মতো মহীয়সী নারীও বাদ যাননি তার অপবাদ থেকে। তার শত্রুতা শুধু কথায় সীমাবদ্ধ ছিল না। কাড়িকাড়ি অর্থ ব্যয় করতেন ইসলামের বিরুদ্ধে প্রচারণায়। সাহাবিদের ভয়ভীতি দেখাতেন, অর্থের প্রলোভনও দিতেন।
সব ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে উম্মে জামিল একবার রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সরাসরি হত্যা করার ছক আঁকেন। তার সঙ্গী হয় স্বামী আবু লাহাবও। এই ভয়াবহ পাপ ও শত্রুতার জবাব আল্লাহ নিজেই দিয়ে দিয়েছেন পবিত্র কোরআনে। সূরা আল-লাহাবে আল্লাহ বললেন, তারা আগুনে পুড়বে, এবং উম্মে জামিল গলায় পাকানো দঁড়ি নিয়ে কাঠ বহন করবে।
সুরা লাহাব কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনার বর্ণনাই নয়, এটি দুনিয়ার সব যুগের কাফেরদের জন্য একটি চিরন্তন সতর্কবার্তা। যারা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর বিরুদ্ধাচরণ করবে, যারা ইসলামের ক্ষতি সাধনে সচেষ্ট হবে—তাদের জন্য আবু লাহাব ও তার স্ত্রীর পরিণামই এক জীবন্ত উদাহরণ। আবু লাহাব ও তার স্ত্রী যেমন রাসুল (সা.) দাওয়াতের বিরোধিতা করেছিল, তেমনই আজও যারা ডলার, পাউন্ড কিংবা টাকা ব্যয় করে ইসলামের অস্তিত্ব পৃথিবী থেকে মুছে ফেলতে চায়—তাদের জন্য এই সূরাটি এক ভয়ংকর ভবিষ্যদ্বাণী। তারা যতই ষড়যন্ত্র করুক, ইসলামের নাম কখনো মুছে যাবে না। বরং একদিন তাদেরই নাম-নিশানা বিলীন হয়ে যাবে ইতিহাসের অন্ধকার পাতায়।
Comments here: